বাংলাদেশের মত মুসলিমপ্রধান দেশে এসব কী হচ্ছে? গতকাল শনিবার (৯ নভেম্বর) মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলায় সমকামী বন্ধুকে না পেয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন।
উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের রায়েরবাগ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রায়েরবাগের জামাল হোসেনের একমাত্র ছেলে কামাল হোসেনকে তার ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সিরাজদিখান থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সকালে ১০টার পরও কামাল হোসেন ঘুম থেকে না ওঠায় তার মা সালমা বেগম ছেলেকে ডাকাডাকি করে এবং দরজায় জোরে আঘাত করে সাড়াশব্দ না পেয়ে ছেলের বাবাকে জানান। ছেলের বাবাও দরজায় অনেকক্ষণ ধাক্কাধাক্কি করার পরও কোনো সাড়াশব্দ না পেলে শেষ পর্যন্ত দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় ভেতরে প্রবেশ করে বিছানার উপর ছেলেকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান তারা। একমাত্র ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়ে কামালের মা-বাবা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় সিরাজদিখান থানার পুলিশ। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে তারা লাশের পাশে বিষাক্ত কীটনাশকের বোতল খুঁজে পান। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য কামালের লাশ নিয়ে যায় তারা। সিরাজদিখান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইয়াকুব শিকদার জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে যুবকটি কীটনাশক খেয়েই আত্মহত্যা করেছেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পুরোপুরি ভেঙে পড়েন মা সালমা বেগম৷ তার আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। এ সময় তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসে ছেলের আত্মহত্যার নেপথ্যের ঘৃণ্য এক কাহিনী৷ ছেলের এ অকাল মৃত্যুর জন্য তিনি তার প্রতিবেশী সিরাজুল হকের ছোট ছেলে নজরুল ইসলামকে এককভাবে দায়ী করেছেন। সালমা বেগমের অভিযোগ, তার ছেলের সাথে নজরুল ইসলামের দীর্ঘদিনের সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারলে এ ধরনের ধর্ম ও সমাজবিরোধী সম্পর্ক থেকে তাদের বেরিয়ে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। নজরুলকে তার পরিবার ২০০৩ সালে জোরপূর্বক সুইডেন পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে নজরুল বাংলাদেশে আসলে তার মা তাকে চাপ প্রয়োগ করে বিয়ে করিয়ে দেন। বিয়ের পর নজরুল আবার সুইডেন চলে যায়। এ সময় কামালকে তার মা-বাবা বিয়ে করানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেও রাজি করাতে পারেনি৷ কামালের মা বলেন, নজরুল বিয়ে করে সুইডেনে চলে যাওয়ার পর তার ছেলে সব সময় হতাশা ও বিষন্ন হয়ে থাকত। শেষ পর্যন্ত কামালের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই সালমা বেগম ছেলের বিয়ের ব্যবস্থা করেন৷ ঘটনার পরদিন রবিবার (১০ নভেম্বর) তার বিয়ের তারিখ ধার্য্য ছিল। এ অবস্থায় নজরুলকে আর কখনোই পাবে না ভেবে তার ছেলে আত্মহত্যা করে বলে তিনি দাবি করেন। কামালের বাবা অভিযোগ করেন, তার ছেলে পূর্বে খারাপ ছিল না। নজরুল ছলে-বলে-কৌশলে সমকামিতার মতো একটা ঘৃণ্য সম্পর্কে তাদের ছেলেকে টেনে এনেছিল। এতোদিন তারা লোকলজ্জা ও সমাজের ভয়ে বিষয়টি গোপন রেখেছিল। এখন একমাত্র ছেলের হত্যাকারী হিসেবে নজরুলের শাস্তি দাবী করছেন কামালের মা-বাবা। নজরুলের বিচারের জন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, ধর্মীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা। এদিকে, কামালের আত্মহত্যার পর নজরুলের সাথে তার সমকামিতার সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকার গণ্যমান্য ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরা নজরুলকে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদানের জোর দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া ভবিষ্যতে এ জাতীয় নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে এজন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকতেও অনুরোধ করেছেন তারা।
============================================================ Advocate Shahanur Islam | An Young, Ascendant, Dedicated Human Rights Defender, Lawyer and Blogger in Bangladesh, Fighting for Ensuring Human Rights, Rule of Law, Good Governance, Peace and Social Justice For the Victim of Torture, Extra Judicial Killing, Force Disappearance, Trafficking in Persons including Ethnic, Religious, Sexual and Social Minority People.
No comments:
Post a Comment